আজ প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন মানুষ আজ মাইগ্রেন সমস্যার ভুক্তভুগি হইত আপনিও এর মধ্যে একজন যিনি এই কষ্টের সমধান খোজ করছেন।
তবে প্রতিবারের মত ঘন্টার পর ঘন্টা কষ্ট ভোগ না করে মুঠো মুঠো ওষুধ না খেয়ে, এখুনি শিখেনিন অব্যর্থ 7টি যোগ আসন পদ্ধতি যা Best Migraine treatment জন্য ।
মাইগ্রেন সমস্যার জন্য কেন Yoga হল Permanent ট্রীটমেন্ট ?
মাইগ্রেন সমস্যার প্রধান কারণ হল প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের ইমব্যালেন্স , যার কারণ হতে পারে অতিরিক্ত চিন্তা বা স্ট্রেস, হাই ব্লাড প্রেসার, হরমোন ইমব্যালান্স, অনিদ্রা, শারিরীক উত্তাপ পরিবর্তন বা কোন বিশেষ খাবারের প্রতি আলার্জি।
Medical Science বা অত্যাধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞানের উপর ওষুধ দ্বারা এই সমস্যার শুধুই temporary ট্রীটমেন্ট করা সম্ভব যা সাময়িক কষ্টের থেকে মুক্তি প্রদানে সক্ষম।
কিন্তু Yoga বা যোগ অভ্যাস হল এক ও অদ্বিতীয় প্রক্রিয়া যা শরীর কে ভিতর থেকে যে কোন সমস্যার ১০০ ভাগ নিরমূলে সক্ষম।
একমাত্র Yoga আমাদের প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম ইমব্যালেন্স কে সম্পুর্ন ভাবে ব্যালান্স করতে শরীরের সম্পুর্ন সুস্থ রাখতে সক্ষম। এবং এটি মেডিকাল রিসার্চের দ্বারা প্রমানিত। [আরো পড়ুন ]
মাইগ্রেন সমস্যার জন্য উপকারি 7টি প্রধান যোগ আসন Yoga For Migraine:
1. অর্ধ চক্রাসন
2. ত্রিকোণ আসন
3. ভুজঙ্গ আসন
4. হ্যালাসন
5. শিশু আসন
6. পদহস্তাসন
7. বিপরীত করণি
1. অর্ধ চক্রাসন পদ্ধতি:
প্রথমে একটি সমতল জায়গায়সোজা হয়ে দাঁড়ান খেয়াল রাখবেন মেরুদন্ড একদম সমান অবস্থায় থাকে, এরপর নিজের কোমরে পিছনের দিকে নিজের দুটি হাত কে বেন্ড করে নিয়ে যান
এবার গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিয়ে শরীরের সঠিক ব্যালেন্স রেখে শরীরের উপরের অংশকে কোমর থেকে ব্যান্ড করে শরীরকে পিছনের দিকে নিয়ে যান।
এর পর যতটা সম্ভব এই অবস্থায় 40 থেকে 50 সেকেন্ড হোল্ড করুন নিজের সুবিধা অনুজাই। তারপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে নিজের বডিকে রিল্যাক্স করুন এবং একি ভাবে আবার প্র্যাকটিস করুন।
অর্ধ-চক্রাসনের উপকারিতা:
এই আসন আমাদের কাঁধ, পিঠ, ঘাড়ের এবং চেষ্টর সমস্ত পেশি কে নির্দিষ্ট ভাবে স্ট্রেচ করে যার ফলে প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম ব্যালান্স হয় এবং এর ফলে আমাদের শরীর রিল্যাক্স হয় ও মাথা ব্যাথা কষ্ট দ্রুত কমে।
2. ত্রিকোণ আসন প্রণালী:
প্রথমে একটি সমতল যায়গা খুজে মেরুদণ্ড সোজা রেখে লম্বা ভাবে দাড়ান, এবার দুটি পা কে যতটা সম্ভব দুদিকে ছড়ান।
নিজের দুটি হাত কে সোজা করে দুদিকে ছড়ান ও নিজের পায়ের পাতা গুলিকে ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এবার আস্তে আস্তে কোমর থেকে বেন্ড করে নিজের হাতকে ডান পায়ের পাশে হাতের তালু মাটিতে স্পর্শ করান।
ও নিজের বাম হাতকে উপরে সমান ভাবে তুলে রাখুন, এবং গভীর ভাবে নিশ্বাস নিয়ে হোল্ড করুন যতটা সম্ভব।
একই রকম ভাবে হাত ও পা কে পরিবর্তন করে পায়ের পাতা কে বাম দিকে ঘুরিয়ে বাম হাতের তালু মাটিতে স্পর্শ করান, ও ডান হাত উপরে তুলে রাখুন এবং ১মিনিট হোল্ড করুন।
ত্রিকোণ আসন উপকারিতা:
এই আসন আমদের স্পাইনাল কর্ড থেকে শুরু করে ঘাড় উপরের অংশের সমস্ত পেশীকে একটি নির্দিষ্ট ভাবে স্ট্রেচ করে যার ফলে প্যারা সিমপ্যাথেটিক নার্ভ তৈরি হওয়া চাপ অনেকটাই কম হয়।
এছাড়া এই আসন আমাদের শরীরের অস্বাভাবিক গতিবিধি ও মানসিক উত্তেজনা কে কম করতে সাহায্য করে।
3. ভুজঙ্গ আসন পদ্ধতি:
সবার প্রথমে একদম সমতল যায়গায় বুকের উপর ভর রেখে সম্পুর্ন লম্বা ভাবে শুয়ে পড়ুন। এর পর ধীরে ধীরে নিজের হাত দুটি ভাজ করে বুকের দুই পাশে রাখুন সমান দূরত্বে রাখুন।
এবার সম্পুর্ন হাতের উপর জোর দিয়ে শরীরে উপরের অংশ এবং মাথা কে উপরে দিকে তুলুন, খেয়াল রাখবেন পেটের নিচের অংশ মাটিতে ঠেকে থাকে।
এই অবস্থায় নিজেকে ১ মিনিট হোল্ড করে রাখুন ও গভীর ভাবে নিশ্বাস নিন। এই ভাবে নিজের সুবিধা মত ৩ থেকে ৪ বার প্র্যাক্টিস করুন।
ভুজঙ্গ আসন উপকারিতা :
এই আসন আমাদের lungs এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও heart রেট ব্যালান্স রাখা থেকে শুরু করে খুব সহজেই স্ট্রেস হরমোন লেভেল কে কম করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এই আসন ঘারের ও মেরুদণ্ডের ঘঠন গত সমস্যা থেকে হওয়া মাথার যন্ত্রনা দূর করতেও সাহায্য করে।
4. হ্যালাসন পদ্ধতি:
সবার প্রথম একটি পূর্ণ্য সমতল যায়গা তে শুয়ে পড়ুন, দুটি হাত থাকবে কোমরে দুই পাশে লম্বা ভাবে। দুটি পায়ের মধ্যে যেন কোন গ্যাপ না থাকে, ও যেন পায়ের দুটি বুড়ো আঙুল এক সাথে স্পর্শ করে থাকে।
এবার দুটি হাতের উপর ভর রেখে পা দুটি মাথার পিছন দিকে নিয়ে যান যত টা সম্ভব্ হয় ও মাটিতে স্পর্শ করান।
লক্ষ রাখতে হবে পা যেন বেন্ড না হয় ও কোমর যেন মাথার পিছনের দিকে চলে না আসে।
হ্যালাসন উপকারিতা:
এই আসন আমাদের মেরুদণ্ডকে সঠিক ভাবে স্ট্রেচ করে যাতে প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম সঠিক সমতায় আসে।
এছাড়া হ্যালাসন আমাদের ব্রেনের ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালনে ও শরীরের সঠিক ব্লাড প্রেসার লেভেল কে ব্যালান্স করতে সাহায্য করে।
এবং এই আসন আমাদের শরীররে নমনীয়তা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে মানসিক চাপ সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
5. শিশু আসন পদ্ধতি :
প্রথম একটি সমতল জায়গায় মেরুদণ্ড সোজা করে বজ্রাসনে বসুন,এর পর কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশকে বেন্ড হাত কে সামনের দিকে লম্বা করে ছড়িয়ে মাথাকে সম্পূর্ণ মাটির সাথে স্পর্শ করান।
এবার গভীরভাবে শ্বাস নিন, এই পজিশনে নিজেকে হোল্ড করুন অন্তত পক্ষে এক মিনিট এরপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসুন এবং 30 সেকেন্ড Rest নিয়ে পুনরায় ২-৩ বার আসনটি প্র্যাকটিস করুন।
শিশু আসন উপকারিতা :
শিশু আসুন আমাদের নার্ভাস সিস্টেম থেকে শুরু করে শরীরের অ্যাসিড লেভেল ব্যালান্স রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া এই আসন আমাদের অধিক উত্তেজনা এবং হরমোন সমস্যা নিয়ন্ত্রন করে, যার ফলে থেকে হওয়া মাথার যন্ত্রণা সহজেই কমানো সম্ভব।
6. পদহস্তাসন পদ্ধতি:
প্রথমে লম্বা ভাবে একটি সমতল জায়গায় দাড়িয়ে ও বুকের কাছে হাতজোড় করুন। এরপর কোমর থেকে শরীরকে নিচের দিকেরঅংশ বেন্ড করে দুই হাত দিয়ে মাটিতে স্পর্শ করুন এবং যতটা সম্ভব স্ট্রেচ করুন ও নিজের মাথাকে হাঁটুর কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন।
এবং গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিন, অন্তত এক থেকে দুই মিনিট এই আসনে নিজেকে হোল্ড করুন।
পদহস্তাসন উপকারিতা:
এই আসন আমাদের অত্যাধিক স্ট্রেস হরমোন কে নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরের মধ্যে জমে থাকা Toxin কে শরীর থেকে দূর করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এই আসন আমাদের মস্তিষ্কে ব্লাড ও অক্সিজেন সাপ্লাই বাড়িয়ে তোলে যার ফলে মাইগ্রেন থেকে হওয়া মাথা ব্যাথা অনেকটাই কমে যায়।
7. বিপরীত করণি পদ্ধতি:
প্রথমে এমন একটি সমতল যায়গা বছে নিন যার কাছেই দেওয়াল আছে, এই জায়গাতে শুয়ে পড়ুন লম্বা ভাবে।
এবার নিজের দুটি হাত শরীর থেকে দূরে রাখুন একদম লম্বা করে ও হাত কে উপর করে।
এবার পা দুটি লম্বা করে দেওয়ালে তুলুন যাতে কোমরের নিচের অংশ দেওয়ালে টাচ করে থাকে এবং গভীর ভাবে নিশ্বাস নিন।
বিপরীত করণি উপকারিতা:
বিপরীত করণি আমাদের শরীরের ব্লাড প্রেসার এবং cortisol লেভেল নরমাল করতে সাহায্য করে।
এই আসন আমাদের শরীরে কে দ্রুত রিল্যাক্স করতে ও central never system কে সঠিক সমতায় আনতে সাহায্য করে।
মাইগ্রেন সমস্যা ক্ষেত্রে জেনে নিন বিশেষ কিছু টিপস:
মাইগ্রেন সমস্যা গ্রস্থ মানুষের কিছু খাবারের প্রতি বিধি নিষেধ তালিকা যা মেনে চলা জরুরী:
- চা এবং কফি জাতীয় পানীয়
- MSG বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট যুক্ত খাবার যেমন ম্যাগি বা চাউমিন থেকে শুরু করে মসলা দ্বার চিপস ইত্যাদি।
- মদ্যপান ও ধূমপান এবং তামাক জাতীয় পদার্থ সেবন
- এছাড়া সবজির মধ্যে টমেটো, বেগুন ইত্যাদি।
মাইগ্রেন সমস্যার যে 4টি কুঅভ্যাসের কারণে বৃদ্ধি পায় :
1. অত্যাধিক স্ট্রেস:
নানা পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে কোনো রকমের স্ট্রেস মাইগ্রেন সমস্যা কে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এবং স্ট্রেস শরীরের মধ্যে নানা toxins তৈরি করে যার ফলে শরীরের central never system সাধারণ স্থিতি ব্যাহত হয়, ও নার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। তাই স্ট্রেস থেকে মুক্তির জন্য অবশই প্রতিদিন মেডিটেশন ও যোগ অভ্যাস করা অতি প্রয়োজন।
2. অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা:
বর্তমানে এটি প্রমানিত যে সব মানুষ ঘুম না হওয়া বা insomnia সমস্যায় ভুগছেন তাদের মাইগ্রেন সমস্যার ভোগান্তি সাধারণের তুলনায় দ্বিগুন। তাই রেগুলার ঘুমের ওষুধের উপর নির্ভর না করে এবং শরীর কে আর রোগ গ্রস্ত না করে, প্রতিদিন নির্দিষ্ট যোগ আসন অভ্যাস ও মেডিটেশন দ্বারা নিজের শারীরিক স্থিতি কে সহজেই সঠিক করা সম্ভব।
3. ডিহাইড্রেশন বা Dehydration :
ডিহাইড্রেশন বা শরীরের মধ্যে জলের অভাব সরাসরি আমাদের শরীরের কার্য ক্ষমতা এবং মস্তিষ্কের সাধারণ চিন্তাভাবনার স্থিতির উপর প্রভাব ফেলে যার থেকে অস্বাভাবিক মাথার যন্ত্রনা বা মাইগ্রেন মত সমস্যাকে উদ্দীপিত করে।
তাই যে সব মানুষ মাইগ্রেন সমস্যা ভুক্ত তাদের অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন শরীররে মধ্যে কোন কারণে যেন জলের অভাব সৃষ্ঠী না হয়।
4. মেডিসিন বা ওষুধ:
যে সব মানুষ প্রচুর পরিমাণে ওষুধ খান তার সাইড এফেক্ট হিসাবে মাইগ্রেন সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে, আবার না জেনে নতুন কোন ওষুধ খাওয়ার প্রভাবে মাইগ্রেনের সমস্যা হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে পারে । তাই প্রতিটা ওষুধ ডাক্তারে পরামশ নিয়ে খান এবং সুস্থ থাকতে Yoga, Meditation, প্রাণায়াম প্র্যাক্টিস করুন।
আসা করছি মাইগ্রেন সম্পর্কে আপনাদের সম্পুর্ন তথ্য দিতে পেরেছি, যদি আপনাদের কোন মতামত থেকে থাকে তবে আমদের Comment Box এর মধ্যে জানতে ভুলবেন না।
আপনারা যদি মেডিটেশন, Yoga বা প্রাণায়াম শিখতে চান তবে দেরি না করে ফোন করুন +91 9433-657-349 এই নাম্বারে বা Mail করুন Contact@wisdomcue.com এর মধ্যে, ধন্যবাদ।