তন্ত্র কী?
“তন্ত্র শব্দের অর্থই হলো কৌশল বা পদ্ধতি” যার দ্বারা বিশেষ ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করা সম্ভব যা সাধারণ বোধ বুদ্ধি বিবেচনার ও অনুভবের উর্ধে।
অর্থাত্ তন্ত্র হল এমন এক প্রণালী যার সঠিক জ্ঞানের সাহায্যে আমরা নিজের শারিরীক ও মানসিক স্থিতির এমন কিছু ক্রিয়া সম্পাদন করতে পারি, যা সাধারনের তুলনায় যে কোন মানুষকে বহু গুণ ক্ষমতাশালি করে তুলতে সক্ষম।
আসলে তন্ত্র মানেই কখনো বিশাল ভয়ংকর মন্ত্র পাঠ বা পৈশাচিক ক্রিয়াকলপ নয়, তন্ত্র প্রধানত নিজের শরীর ও মনের উপর চরম নিয়ন্ত্রণ এবং অনুশাসন স্থাপন পদ্ধতি, যার উপর ভিত্তি করে সম্পুর্ন প্রক্রিয়া।
এই প্রক্রিয়া আমাদের কর্মের সাথে কোন না কোন প্রকারে গভীর ভাবে জড়িত। যেমন মেডিটেশন, যোগ অভ্যাস ও প্রাণায়াম মত শারিরীক ও মানসিক ক্রিয়া যা হইত দেখত খুবই সাধারণ তবে এর মূল স্তম্ভ হলই তন্ত্র। এছাড়া তন্ত্র কে যোগ শাস্ত্রের একটি ভাগ “তন্ত্র যোগ” বলা হয়।
এই কারণে ঋষিরা বলে গেছেন বীনা তন্ত্রে বা বীনা কৌশলে সমস্থ প্রকার অধ্যাতিক প্রক্রিয়া অসম্পুর্ন।
তন্ত্র শক্তির ব্যবহার:
তন্ত্র ক্ষমতা ব্যবহারের দ্বারা যোগী ও সিধ্য পুরুষেরা দেবতার মূর্তি মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে শক্তির আবদ্ধিকরণ, শক্তিশালী যন্ত্রম সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষমতার সিদ্ধি লাভের জন্য ব্যবহার করে থাকেন।
খুব অবাক করা বিষয় হল কিছু বিশেষ প্রকৃতির তন্ত্র ব্যবহার করে মুনি ঋষিরা কয়েক হাজার বছর দীর্ঘ আয়ু লাভ করতে সক্ষম ছিলেন। কিছু তন্ত্র ক্রিয়ার সাহায্যে ঋষিরা শূন্যে ভাসমান অবস্থায বীনা জল আহার গ্রহণ করে বহু দিন থাকতে সক্ষম ।
আবার কিছু যোগীরা তন্ত্রের মন্ত্রর বলের দ্বারা আত্মজ্ঞানের চরম সীমায় পৌছেতে পেরেছেন। এছাড়াও তন্ত্র শক্তির ব্যবহার মাধ্যমে অতিপ্রাকৃতিক শক্তির আহ্বান, বিভিন্ন সিদ্ধিলাভ ইত্যাদী।
তন্ত্র সাধনা প্রণালী:
যে কোন তন্ত্র ক্রিয়ার জন্য নিজের শরীর ও মনকে উপর চরম নিয়ন্ত্রণ একান্ত প্রয়োজন।
কারণ তন্ত্র বিদ্যা নিজের প্রাণ শক্তির উপর নির্ভরকারি অভন্তরীন প্রক্রিয়া। এই ক্রিয়ার বেশির ভাগটাই মন্ত্রের আকার গঠিত এবং এর সাথে যুক্ত হয় প্রবল কল্পনা শক্তি, ও নির্দিষ্ট শক্তিকে অবধ্য করি বিশেষ যন্ত্রম স্স্থাপন ক্রিয়া। এই তিনটি জিনিসের একত্রে সম্পুর্ন হয় তন্ত্র সাধনা প্রণালী।
এছাড়াও তন্ত্র বিদ্যা নিজের প্রাণ শক্তির উপর নির্ভরকারি প্রক্রিয়া। এই কারনে যে কোন প্রকার তন্ত্র সাধনার করা হোক না কেন প্রতিটি তন্ত্র ক্ষেত্রেই প্রয়োজন প্রাণ বা প্র্রান শক্তির ধারণ-করি দ্রবাদী, যেমন – সরষে, তিল, তাজা ফুল, জীবন্ত পশু ইত্যাদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত।
তাই তন্ত্র কোন সাধারণ ক্রিয়া নয় তাই তন্ত্র শিক্ষা নিতে তন্ত্র সিদ্ধ গুরুর প্রয়োজন, বীনা জ্ঞানে তন্ত্র সাধনার অর্থ হল মৃত্যু।
তন্ত্র সাধনা কত প্রকার ও কী কী?
তন্ত্র ক্রিয়া কে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, প্রথম হল আভ্যন্তরীণ যেখানে সমস্থ ক্রিয়া শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং দ্বিতীয় হল বাহ্যিক প্রক্রিয়া যেখানে নানা আচার অনুষ্ঠান ক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার।
এই দুই ভাগের ভিত্তি করে ভারতে কয়েক হাজার প্রকৃতির তন্ত্র সাধনা প্রণালী জন্ম যা ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এছাড়াও বহু প্রকৃতির তন্ত্র সাধন প্রণালী সম্পুর্ন গোপন ও গুরু শিষ্য পরম্পরায় লাভ হয়ে থাকে, যার লিখিত কোন পুথিপত্র নেই।
সব কিছুর মধ্যেও পরিচিত কিছু তন্ত্র প্রণালীর নাম হল কালভৈরব তন্ত্র, কুমারী তন্ত, কুণ্ডলিনী তন্ত্র, বিশুধি তন্ত্র, শৈব তন্ত্র, শাক্ত তন্ত্র, সূর্য তন্ত্র, কামধেনু তন্ত্র, নির্বান তন্ত্র, কামখা তন্ত্র, তারা তন্ত্র, কুল তন্ত্র, অভয় তন্ত্র, যোগিনী তন্ত্র ইত্যাদি।
এছাড়া আমাদের অথর্ববেদ,পুষ্করা সংহিতা, পদ্ম সংহিতা, ভৈরব সংহিতা, গুপ্ত তন্ত্র লিপি, নারদীয় সংহিতা বহু গ্রন্থ থেকে বহু তন্ত্র রীতি উল্লেখ পাওয়া যায়।
অবাক করা বিষয় হল আমরা নিজের অজান্তে প্রতিদিন বহু কাজ করে থাকি যা সম্পুর্ন রূপে তন্ত্র এর উদাহরণ হল: ঈশ্বর ভক্তি, মানুষের প্রতি গভীর বিশ্বাস ও প্রেম, ভালবাসা ইত্যাদী।
তন্ত্র সাধনা সম্পর্কিত সতর্কতা:
তন্ত্রের নামে মানুষের ভয় কে কাজে লাগিয়ে ও আশহায়তা সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ প্রতি দিন মানুষ কে বিভিন্ন আসা দেখিয়ে নানা ভাবে ঠকিয়ে চলেছেন শুধু মাত্র অর্থের লোভে তাই সতর্ক থাকুন এবং তন্ত্রের নামে ভন্ডামি করা মানুষ জনের কাছ থেকে দূরে থাকুন।
আসা করছি তন্ত্র সম্পর্কে আপনাদের নির্দিষ্ট ধারনা প্রদান করতে পেরেছি কারণ তন্ত্র কোন ছোট বিষয় নয়। যদি আপনার আর কিছু জানার থাকে তবে Mail করুন contact@wisdomcue.com
যদি আপনার Meditation শিখতে চান তবে এখুনি কল করুন এই +91 9433 657 349 এই নাম্বাবে বা আমাদরে মেল করতে পারেন contact@wisdomcue.com মধ্যে, ধন্যবাদ ।